সর্বশেষ আপডেট : ৮ ঘন্টা আগে
বুধবার, ১ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

এমন ভয়াবহতা আগে দেখেনি সিলেটবাসী

আজ থেকে ৩৪ বছর আগে বাংলাদেশে ভ’য়াবহ ব’ন্যা হয়েছিল। আর সে সময় ব’ন্যাও বেশ দীর্ঘ সময় স্থায়ী ছিল। অর্থাৎ ১৯৮৮ সালের ব’ন্যার দৃশ্য এখনও অনেকের চোখের সামনে ভেসে ওঠে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি।

এর পরের বছরও আবার ব’ন্যা হয়। এ দুটো ব’ন্যায় অর্থনীতির সবক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। সে সময় বাংলাদেশ বেতারে প্রায় সময় একটা গানের আকুতির সুর উচ্চারিত হতো। গানের সেই কলি ছিল, ‘ব’ন্যা জলে নেইকো দয়া, নেই কো মায়া/ যেথা সে যায় সেথা ছড়ায় কালো ছায়া/ ভাঙে বাসা ভাঙে আশা’।

বাংলাদেশে ব’ন্যার ইতিহাস যুগ যুগের ইতিহাস। কবে এ অঞ্চলে প্রথম ব’ন্যা হয় তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ১৭৬৭ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ব’ন্যা হয়ে আসছে। ব’ন্যার দাপটের শুরুটা মূলত ১৯৫৪ সালে। সেই থেকে এদেশে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ৩২টি বড় ধরনের ব’ন্যা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ব’ন্যা বেশ ভ’য়াবহতার ছাপ রাখে। এর মধ্যে ১৯৫৪, ৫৫, ৫৬, ৬২, ৬৮, ৭০, ৭১, ৭৩, ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৮০, ৮৪, ৮৭, ৮৮ ও ৯৮ সালকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়।

১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ব’ন্যা হয়েছে ৯টি। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে ব’ন্যার বোঝা মা’থায় নিয়ে। ১৯৭০ সালে ভ’য়াবহ ব’ন্যার সময় সরকারি হিসাবে প্রায় ৫ লাখ মানুষের প্রা’ণ যায়। অবশ্য ব’ন্যার সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসও যু’ক্ত হয়। ১৯৭১ সালে ব’ন্যায় মানুষ ছাড়াও অসংখ্য গবাদিপশুর মৃ’ত্য হয়। আর মানুষ মা’রা যায় ১২০ জন। এ ছাড়া ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও কম ছিল না।

আগে গ্রামে বসবাসকারী মানুষজনই টের পেত ব’ন্যার কশাঘাত। কিন্তু ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালে নগরবাসী তা হাড়ে হাড়ে টের পায়। শহরজুড়ে অথৈ পানি আর পানি। ১৯৮৮ সালে ৬০ লাখ মানুষের ঢাকা শহরের ৫০ লাখই হয়ে পড়ে পানিব’ন্দি। সে সময় দেশের ৬৪টি জে’লার মধ্যে ৪৭টি জে’লা পানিতে তলিয়ে যায়। আর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল অবর্ণনীয়। মানুষ ছাড়াও ঘরবাড়ি, সড়ক, রেলপথ, সেতু, কালভা’র্ট ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করতে অনেক সময় ব্যয় হয়। এমনকি বিমানবন্দরও পানির নিচে তলিয়ে যায়।

এক বছরের ব’ন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই আবার সেই ব’ন্যা। অর্থাৎ ১৯৮৯ সালে আবার সেই ব’ন্যা। ব’ন্যা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। এর কিছুদিন পর আবারও ব’ন্যা। তবে দেশজুড়ে নয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশজুড়ে এ পানির প্রবাহ ছিল।

বাংলাদেশে এত ব’ন্যা হয় কেন? এ প্রশ্নে পানি বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত জানান, ব’ন্যা না হলে তো বাংলাদেশ হতো না। অর্থাৎ বাংলাদেশের অবস্থানটা এমন স্থানে যে, গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ এলাকায় ব’ন্যার প্রবণতা রয়েছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত বিভিন্ন উপনদীর কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছরই বর্ষাকালে ছোট থেকে মাঝারি আকারে ব’ন্যা হয়ে থাকে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ছোটবড় প্রায় ২৩০টি নদী বয়ে গেছে। সে কারণে বাংলাদেশে ব’ন্যার প্রকোপ বেশি। ব’ন্যা মূলত মৌসুমি ঋতুতে হয়ে থাকে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

সিলেটে গত মে মাসে একবার ব’ন্যা হয়ে গেছে। আবার হঠাৎ ব’ন্যায় চরম বিপাকে সিলেটবাসী। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্ম’দ মোশারফ হোসেন জানান, গত কয়েকদিনে ভা’রতের চেরাপুঞ্জির সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানি সিলেটের ব’ন্যা ভ’য়াবহ রূপ নেয়। তবে এত ভ’য়াবহতা আগে দেখেনি সিলেটবাসী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: